একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের অধ্যায়-২ থেকে একটি সৃজনশীল নমুনা প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
শরীফ সাহেব অফিসের কম্পিউটারগুলোর মধ্যে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। একদিন একটি তার বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সম্পূর্ণ নেটওয়ার্কটি অচল হয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে একজন নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শে ভিন্নতর নেটওয়ার্কব্যবস্থা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিলেন। নতুন ব্যবস্থায় যদি নেটওয়ার্কের কোনো অংশ অচল হয়, তবে বিকল্প আরও পথ যোগাযোগের জন্য উন্মুক্ত থাকে এবং সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক সচল থাকে।
ক. ব্যান্ডউইটথ কী?
খ. মাধ্যম হিসেবে ফাইবার অপটিক কেব্ল তড়িত্ চৌম্বক প্রভাবমুক্ত—ব্যাখ্যা করো।
গ. শরীফ সাহেবের অফিসের নেটওয়ার্কটি কোন ধরনের? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত নতুন নেটওয়ার্ক স্থাপনের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো।উত্তর-ক.
এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে কিংবা এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ডেটা স্থানান্তরের হারকে ব্যান্ডউইটথ বলে।
উত্তর-খ.
অপটিক্যাল ফাইবার হলো ডাই ইলেকট্রিক পদার্থ কাচ বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি একধরনের আঁশ, যাতে ইলেকট্রিক সিগন্যালের পরিবর্তে আলোক সিগন্যাল প্রবাহিত হয় আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন পদ্ধতিতে। তড়িত্ চৌম্বক প্রভাব থাকতে হলে সেখানে অবশ্যই তড়িতের উপস্থিতি বা প্রবাহ থাকতে হবে। যেহেতু ফাইবার অপটিক্যাল কেবেলর মধ্য দিয়ে আলোক সিগন্যাল প্রবাহিত হয়, তড়িত্ সিগন্যাল প্রবাহিত হয় না, সেহেতু মাধ্যম হিসেবে ফাইবার অপটিক কেব্ল তড়িত্ চৌম্বক প্রভাবমুক্ত।
উত্তর-গ.
শরীফ সাহেবের অফিসের আগের নেটওয়ার্কটি ছিল রিং টপোলজি। কোনো নেটওয়ার্কে কম্পিউটারগুলোকে যদি কেবেলর মাধ্যমে একটি রিং বা লুপের আকারে সংযোগ দেওয়া হয়, তখন তাকে রিং টপোলজি বলে। এই টপোলজিতে কোনো কম্পিউটার ডেটা পাঠালে তা রিঙের মধ্যে বৃত্তাকার পথে একই দিকে ঘুরতে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত নির্দিষ্ট কম্পিউটার ডেটা গ্রহণ না করে। রিঙে কেবেলর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে বা কোনো কম্পিউটারে ত্রুটি দেখা দিলে অথবা কোনো কম্পিউটার অপসারণ করলে পুরো নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে এবং নতুন করে সংযোগ স্থাপন করতে হয়। যেহেতু উদ্দীপকের শরীফ সাহেবের অফিসের নেটওয়ার্কটির একটি তার বিচ্ছিন্ন হওয়ায় পুরো নেটওয়ার্কটি অচল হয়েছে, তাই এটি একটি রিং টপোলজি।
উত্তর-ঘ.
উদ্দীপকে নতুন নেটওয়ার্কব্যবস্থায় যদি কোনো অংশ অচল হয়, তবে বিকল্প আরও পথ যোগাযোগের জন্য উন্মুক্ত থাকে এবং সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক সচল থাকে। অতএব, নতুন নেটওয়ার্কটি হলো মেশ টপোলজি। যে টপোলজিতে প্রতিটি কম্পিউটার একে অপরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকে, তাকে মেশ টপোলজি বলে। মেশ টপোলজি ব্যবহারের সুবিধা হলো—
i) কোনো সংযোগ লাইন বা কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে তেমন কোনো অসুবিধা হয় না, অন্য পথ দিয়ে ডেটা আদান-প্রদান করা যায়।
ii) এতে ডেটা কমিউনিকেশনে অনেক বেশি নিশ্চয়তা থাকে।
iii) খুব সহজেই নেটওয়ার্কের সমস্যা সমাধান করা যায়।
iv) যেকোনো দুটি নোডের মধ্যে সরাসরি দ্রুতগতিতে ডেটা আদান-প্রদান করা যায়।
অতএব, উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে শরীফ সাহেবের উল্লিখিত নতুন নেটওয়ার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে যৌক্তিক।
মাস্টার ট্রেইনার,
প্রভাষক, রাউজান কলেজ, চট্টগ্রাম

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন